ঢাকা , শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫ , ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুই প্রতিবন্ধী নিয়ে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের মানবেতর জীবন।


আপডেট সময় : ২০২৫-০৮-০২ ১৬:২৯:০৭
দুই প্রতিবন্ধী নিয়ে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের মানবেতর জীবন। দুই প্রতিবন্ধী নিয়ে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের মানবেতর জীবন।
 
মো. আজিজার রহমান, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: একই পরিবারে দুই প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন, দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের দুবলিয়া হটাৎপাড়া গ্রামে বৃদ্ধ পিতা-মাতা। হটাৎ পাড়া গ্রামের  বৃদ্ধ মো. আশরাফ আলী (৭৬) ও তাঁর স্ত্রী মোছা. আলেয়া বেগম (৬০)। তাঁদের দুই ছেলে মো: আনোয়ার হোসেন (৩৫) ও মো: আক্কাস আলী (৩২) শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। সম্পূর্ণভাবে কর্মক্ষমতা হারানো এ দুই ভাই বিছানাতেই শুয়ে থাকেন।
 
আয়ের উৎস বলতে পরিবারটি প্রতিবন্ধী ভাতা আর বৃদ্ধ বাবা-মায়ের অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা আয় দিয়েই কোনোমতে তাদের সংসার চালান। প্রয়োজনে মা মানুষের কাছে সাহায্য চেয়ে ছেলেদের বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেন তিনি।
 
পরিবার ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চার ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আলম আলী স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদা থাকেন। একজন ছেলে মারা গেছেন। অসহায় দম্পতি এখন দুই প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়েই চরম কষ্টে দিন পার করছেন তারা।
 
শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অন্যের দানকৃত জমিতে নির্মান করেছেন,জরাজীর্ণ একটি বসবাসের জন্য কড়ে ঘর। ঘরের এক কোণে দুই প্রতিবন্ধী সন্তান শুয়ে আছে, আর মা তাদের সেবা-যত্নে ব্যস্ত। সংসারের নানা কাজের ফাঁকে বৃদ্ধ বয়সেও তিনি পরিশ্রম করে স্বামী ও ছেলেদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার লড়াই করছেন।
 
মোছা. আলেয়া বেগম বলেন, “স্বামী আর দুই প্রতিবন্ধী ছেলে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটে। যতটুকু পারি, অন্যের বাড়িতে কাজ করি। মাঝে মাঝে মানুষের কাছে সাহায্যের হাত পাততে হয়। না হলে খাওয়া-দাওয়া কিছুই জোটের না। বৃত্তবানদোর সহায়তা পেলে এই দুই প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে ভালোভাবে বাঁচতে পারতাম। তা আর হলো কই"।
 
প্রতিবন্ধী দুই ছেলের বড় ভাই আলম আলী বলেন, “আমি নিজেই গরিব মানুষ। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কষ্টে সংসার চালাই। তারপরও যতটুকু পারি, বাবা-মা ও ভাইদের সাহায্য করি। কিন্তু ওদের চিকিৎসা আর নিয়মিত খাবার জোগানো আমার পক্ষে সম্ভব না। এজন্য সরকারি-বেসরকারি সহায়তা প্রয়োজন।”
 
গোয়ালডিহি ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, “পরিবারটির অবস্থা সম্পর্কে আমি জানি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কিছু সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা পেলে তাদের জীবনমান কিছুটা উন্নত হতে পারে।”
 
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তমিজুল ইসলাম বলেন, “দুই প্রতিবন্ধী ভাই ইতোমধ্যে প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। তবে প্রতিবন্ধী দুই ভাই ও তাঁদের বাবা-মার ভরণপোষণসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে ইউএনও মহোদয় ও ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”






 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ